প্যারাময় প্যারা!

 


ছেলেটা রাজশাহীর। সিলেটি একটা মেয়ের সাথে বেশ কতোদিনের সম্পর্ক। মানে সেরকম প্রেমটেম না। এমনিতেই চ্যাটিং বেটিং মারতো। সিম্পলি ফ্রেন্ড। তো আমের মৌসুম চলতেছে। মেয়েটা জিগাইলো রাজশাহীর আমের এতো কদর ক্যান, খেতে আহামরি মজা নাকি?

ছেলেটার আমের বাগান ছিলো, আর বেশ ভালোই আম আসতো, স্বাদে অতুলনীয়ই বটে। তো মেয়েটাকে বললো সেই কথা, মানে আহামরি কথাটা। মেয়েটার কৌতূহল আরও বাড়লো, রাজশাহীর আম আসলেই তো অন্যরকম হবে। বলে দিলো সিলেটে ২ কেজি পাঠিয়ে দাও, হাহা! ঢংয়ের ছলে। ছেলেটাও বুঝলো ঢং করতেছে, তাও বললো পাঠানো গেলে পাঠিয়ে দিতাম সিউর।
তা দুদিন পর ছেলেটা পাঠানোর পথ খুঁজে পেলো, এমনিতেই পেয়ে গেলো, ওতো উঠেপড়ে লাগে নি আম সিলেটে পাঠানোর জন্য। এখন ভাবলো দিয়েই দেই ওকে কয়েক কেজি। বাগান থেকে পাড়া হলো আম, এখন অন্তত ৫ কেজির মতো তো দিতে হবে, এতো দূর পাঠাবে দেওয়াই যায়। পরিবারের সবাইকে কি বলে ম্যানেজ করবে বিষয়টা!
এই তো শুরু আসল খেলা! এমনিতে একটা মেয়েকে কেউ ৫ কেজি আম পাঠিয়ে দিবে, তাও আবার এক দেশ থেকে আরেক দেশে! হাহ! শেষমেশ ভাবলো ঘরে সবাইকে বলবে, তার একটা ফ্রেন্ডকে পাঠাবে, ফেসবুক ফ্রেন্ড, বেশ ক্লোজ। এটা খুবই সিম্পলি সবাই ছেড়ে দিলো।
আম প্যাকেজিং করার পর মেয়েটাকে বললো কথাটা! মেয়েটা বিশ্বাসই করে নাই! যাইহোক, পরে ঠিকানা-ঠাকানার ব্যবস্থা হলো।
হুরররে.... আম গেলো সিলেট!
৩ মাস পর।
সবকিছু স্বাভাবিক। হঠাৎ ছেলেটার বড় বোন ঐ ফ্রেন্ডের কথা জিগাইলো তাকে।
-এই তো, ভালো আছে, কথা হয় প্রায়ই।
বোন বলে কথা! খোঁচা মেরে কথা বলবেই! বললো এতদূরে কষ্ট করে আম দিলি, সে তোরে কিচ্ছু দিলো না।
চোরের মনে পুলিশ-পুলিশ! কিছু বলতে পারলো না।
যাইহোক, পুলিশ-পুলিশ ভাবটা বেশ যন্ত্রণা দিচ্ছে ছেলেটাকে। এখন সিলেটি মেয়েটার কাছ থেকে তার কিছু আনানোর ব্যবস্থা করতে হবে, তাও আবার ঘরে পরিচয় হবে ছেলে বন্ধু! হাহা!
কিন্তু... কীভাবে? মেয়েটাকে তো আর বলা যায় না কিছু পাঠাও।
হ্যাঁ, ব্যবস্থা ঠিকই বের করেছে বেচারা। নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করে রাজশাহী শহর থেকে সাতকড়ার ব্যবস্থা করলো, কারণ সাতকড়া সিলেটের বেশ জনপ্রিয় জিনিস। সাতকড়া তার হাতে আসার পর, স্কুলের লাইব্রেরি থেকে ঝাকানাকা কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে বোনের কাছে দিলো!
লেখা ছিলো-
From: Hasan Ahmed
Sylhet.

Post a Comment

Previous Post Next Post